Skip to main content

ধারণাগত আয় (Deemed Income): ধারা-১৯ এর একটি পর্যালোচনা [পর্ব-৪]

ধারণাগত আয় (Deemed Income): ধারা-১৯ এর একটি পর্যালোচনা [পর্ব-৪]

– আসাদ হাফিজ

 

(3) Where, in any income year, the Assessee has incurred any expenditure and he offers no explanation about the nature and source of the money for such expenditure, or the explanation offered is not in the opinion of the Deputy Commissioner of Taxes, satisfactory, the amount of the expenditure shall be deemed to be the income of the Assessee for such income year classifiable under the head “Income from other sources”.
একজন করদাতা কোন আয়বর্ষে এমন কোন খাতে খরচ করেছেন যার প্রকৃতি ও উৎস সম্পর্কে কোন ব্যাখ্যা দাখিলকরেননি বা দাখিলকৃত ব্যাখ্যা আইনানুগ হয়নি, অথবা খরচ তার নিরূপিত আয় দ্বারা আবৃত হয়নি, তাহলে এরূপ খরচআয়কর অধ্যাদেশ, ১৯৮৪ এর ১৯(৩)/৩৩ডি ধারায় অন্যান্য উৎসের আয় হিসেবে গণ্য হবে।

তবে এ জাতীয় অপ্রদর্শিত খরচ আয় হিসেবে বিবেচিত হওয়ার জন্য প্রযোজ্য ক্ষেত্রে সম্পদ বিবরণী পুনর্গঠন অত্যন্তজরুরী যা অনেক ক্ষেত্রেই সার্কেল কর্মকর্তাগণ করেন না।

উদাহরণ সহকারে বিষয়টি পরিষ্কার করা যাক।
উদাহরণ:

একজন করদাতার পারিবারিক খরচ নিরূপণপূর্ব ১৯ ধারায় কোন আয় নিরূপণ করা হয়নি। তবে, ২৪, ২৮ ও ৩৩ ধারায়নিম্নরূপ আয় নিরূপণ করা হয়েছে:

ধারা প্রদর্শিত আয় নিরূপিত আয়
ধারা-২৪: গৃহসম্পত্তি হতে আয় ৬,০০,০০০ ৭,০০,০০০
ধারা-২৮: ব্যবসা হতে আয় ৬,০০,০০০ ৭,০০,০০০
ধারা-৩৩: অন্যান্য উৎসের আয় ১,০০,০০০ ২,০০,০০০
মোট আয় ১৩,০০,০০০ ১৬,০০,০০০
৩০ জুন ২০১৯ তারিখে প্রদর্শিত নিট সম্পদ ২,০৫,০০,০০০
৩০ জুন ২০১৮ তারিখে প্রদর্শিত নিট সম্পদ ২,০০,০০,০০০
সম্পদের পরিবৃদ্ধি ৫,০০,০০০
যোগ: পারিবারিক খরচ
খরচের খাতসমূহ প্রদর্শিতখরচ প্রাক্কলিত খরচ
১. খাদ্য, বস্ত্র ও অন্যান্য নিত্য প্রয়োজনীয় ব্যয় ৮০,০০০ ১,০০,০০০
২. আবাসন সংক্রান্ত ব্যয় ১,০০,০০০ ২,০০,০০০
৩. মোটরযান ও পরিবহন সংক্রান্ত ব্যয়
ক. ড্রাইভারের বেতন, জ্বালানি ও রক্ষণাবেক্ষণ ১,০০,০০০ ৩,০০,০০০
খ. অন্যান্য পরিবহন ২৪,০০০
৪. গৃহস্থালি ও  ইউটিলিটি সংক্রান্ত ব্যয়
ক. বিদ্যুৎ বিল ১০,০০০ ৬০,০০০
খ. গ্যাস, পানি, পয়ঃনিষ্কাশন ও দৈনন্দিন বর্জ্য অপসারণ ১২,০০০
গ. টেলিফোন, ইন্টারনেট ও টেলিভিশন চ্যানেল সাবস্ক্রিপশন ৩৬,০০০
ঘ. গৃহস্থালির সহায়ক কর্মী ও অন্যান্য ব্যয় ২৪,০০০
৫. সন্তানদের শিক্ষা ব্যয় ২,০০,০০০
৬. বিশেষ ব্যয়
ক. উৎসব, পার্টি, ইভেন্ট ও উপহার সংক্রান্ত ব্যয় ৬০,০০০ ২,০০,০০০
খ. দেশে ও বিদেশ ভ্রমণ, অবকাশ, ইত্যাদি ২,০০,০০০
গ. অনুদান, মানবিক সহায়তা, ইত্যাদি
ঘ. অন্যান্য বিশেষ ব্যয়
৭. অন্যান্য ব্যয়
জীবনযাপন সংশ্লিষ্ট মোট ব্যয় ৩,৬০,০০০ ১৩,৫৬,০০০
৮. প্রদত্ত আয়কর, চার্জ, ইত্যাদি
ক. উৎসে কর্তিত/ সংগৃহীত কর ১০,০০০ ১০,০০০
খ. পরিশোধিত আয়কর, সারচার্জ বা অন্যান্য পরিমাণ ১০,০০০ ১০,০০০
মোট ব্যয় ও কর ৩,৮০,০০০ ১৩,৭৬,০০০ ১৩,৭৬,০০০
খরচসহ পরিবৃদ্ধি ১৮,৭৬,০০০
বাদ: নিরূপিত আয় (১৬,০০,০০০)
অতিরিক্ত পরিবৃদ্ধি ২,৭৬,০০০
করদাতার পরিবৃদ্ধি উৎস দ্বারা আবৃত নয় বিধায় অতিরিক্ত পরিবৃদ্ধির ব্যাখ্যা চাওয়া হলে করদাতা কোন সন্তোষজনক ব্যাখ্যা দাখিল করতে ব্যার্থ হন। আইনানুগ ব্যাখ্যার অবর্তমানে অতিরিক্ত পরিবৃদ্ধি আয়কর অধ্যাদেশ, ১৯৮৪ এর ১৯(৩)/৩৩ডি অনুয়ায়ী অন্যান্য উৎসের আয় হিসেবে মোট আয়ের সাথে যোগ করা হলো  

 

২,৭৬,০০০

উদাহরণ:

একজন করদাতার পারিবারিক খরচ নিরূপণপূর্ব নিম্নরূপ আয় নিরূপণ করা হয়েছে:

ধারা প্রদর্শিত আয় নিরূপিত আয়
ধারা-২৪: গৃহ সম্পত্তি হতে আয় ৬,০০,০০০ ৭,০০,০০০
ধারা-২৮: ব্যবসা হতে আয় ৬,০০,০০০ ৭,০০,০০০
ধারা-৩৩: অন্যান্য উৎসের আয় ১,০০,০০০ ২,০০,০০০
ধারা-১৯(২)/৩৩ডি: ফ্ল্যাট ক্রয়ে অপ্রদর্শিত বিনিয়োগ ৫,০০,০০০
ধারা-১৯(৫)/৩৩ডি: অপ্রদর্শিত এফডিআর ৫,০,০০০০
মোট আয় [সম্পদ বিবরণী পর্যালোচনাপূর্ব] ১৩,০০,০০০ ২৬,০০,০০০
৩০ জুন ২০১৯ তারিখে প্রদর্শিত নিট সম্পদ ২,০৫,০০,০০০
(+) ফ্ল্যাট ক্রয়ে অপ্রদর্শিত বিনিয়োগ ৫,০০,০০০
(+) অপ্রদর্শিত এফডিআর ৫,০,০০০০
৩০ জুন ২০১৯ তারিখে পুনর্গঠিত নিট সম্পদ ২,১৫,০০,০০০
৩০ জুন ২০১৮ তারিখে প্রদর্শিত নিট সম্পদ ২,০০,০০,০০০
সম্পদের পরিবৃদ্ধি ১৫,০০,০০০
যোগ: প্রাক্কলিত পারিবারিক খরচ ১৩,৭৬,০০০
খরচসহ পরিবৃদ্ধি ২৮,৭৬,০০০
বাদ: নিরূপিত আয় (২৬,০০,০০০)
অতিরিক্ত পরিবৃদ্ধি ২,৭৬,০০০
করদাতার পরিবৃদ্ধি উৎস দ্বারা আবৃত নয় বিধায় অতিরিক্ত পরিবৃদ্ধির ব্যাখ্যা চাওয়া হলে করদাতা কোন সন্তোষজনক ব্যাখ্যা দাখিল করতে ব্যর্থ হন। আইনানুগ ব্যাখ্যার অবর্তমানে অতিরিক্ত পরিবৃদ্ধি আয়কর অধ্যাদেশ, ১৯৮৪ এর ১৯(৩)/৩৩ডি ধারা অনুয়ায়ী অন্যান্য উৎসের আয় হিসেবে মোট আয়ের সাথে যোগ করা হলো ….  

 

২,৭৬,০০০

মোট আয় ২৮,৭৬,০০০
এখন সম্পদ বিবরণী পুনর্গঠন না করলে কি দাড়ায় তা দেখি:
ধারা প্রদর্শিত আয় নিরূপিত আয়
ধারা-২৪: গৃহ সম্পত্তি হতে আয় ৬,০০,০০০ ৭,০০,০০০
ধারা-২৮: ব্যবসা হতে আয় ৬,০০,০০০ ৭,০০,০০০
ধারা-৩৩: অন্যান্য উৎসের আয় ১,০০,০০০ ২,০০,০০০
ধারা-১৯(২)/৩৩ডি: ফ্ল্যাট ক্রয়ে অপ্রদর্শিত বিনিয়োগ ৫,০০,০০০
ধারা-১৯(৫)/৩৩ডি: অপ্রদর্শিত এফডিআর ৫,০,০০০০
মোট আয় [সম্পদ বিবরণী পর্যালোচনাপূর্ব] ১৩,০০,০০০ ২৬,০০,০০০
৩০ জুন ২০১৯ তারিখে প্রদর্শিত নিট সম্পদ ২,০৫,০০,০০০
৩০ জুন ২০১৮ তারিখে প্রদর্শিত নিট সম্পদ ২,০০,০০,০০০
সম্পদের পরিবৃদ্ধি ৫,০০,০০০
যোগ: প্রাক্কলিত পারিবারিক খরচ ১৩,৭৬,০০০
খরচসহ পরিবৃদ্ধি ১৮,৭৬,০০০
বাদ: নিরূপিত আয় (২৬,০০,০০০)
অতিরিক্ত পরিবৃদ্ধি
সম্পদের পরিবৃদ্ধি নিরূপিত আয় আয় দ্বারা আবৃত।
মোট আয় ২৬,০০,০০০
এখানে সম্পদ পুনর্গঠন করা না করার কারণে অতিরিক্ত পরিবৃদ্ধি হয়নি। পারিবারিক খরচে অতিরিক্ত প্রাক্কলিত ব্যয় ১৯(২) ও ১৯(৪) ধারায় নিরূপিত আয় দ্বারা আবৃত হয়ে গেছে যা আইনানুগভাবে ভুল হয়েছে, কারণ উক্ত আয় ইতোমধ্যে সম্পদে রূপান্তরিত হয়েছে। তাই ১৯ ধারায় কোন ধারণাগত আয় নিরূপিত হলে সম্পদ বিবরণী পুনর্গঠন আবশ্যক।

ধারণাগত আয় (Deemed Income): ধারা-১৯ এর একটি পর্যালোচনা [পর্ব-৩]

ধারণাগত আয় (Deemed Income): ধারা-১৯ এর একটি পর্যালোচনা [পর্ব-৩]

 আসাদ হাফিজ

(2)

Where, in any income year, the Assessee has made investments or is found to be the owner of any bullion, jewellery or other valuable article and the Deputy Commissioner of Taxes finds that the amount expended on making such investments or in acquiring such bullion, jewellery or other valuable article exceeds the amount recorded in this behalf in the books of account maintained by the Assessee for any source of income and the Assessee offers no explanation about the excess amount or the explanation offered is not, in the opinion of the Deputy Commissioner of Taxes, satisfactory, the excess amount shall be deemed to be the income of the Assessee for such income year classifiable under the head “Income from other sources”.
কোন আয় বর্ষে একজন করদাতা যদি কোন বিনিয়োগ করে থাকেন বা মূল্যবান কোন সম্পদের মালিক হয়ে থাকেন এবং সম্পদ ও দায় বিবরণীতে উক্ত সম্পদের প্রকৃত অর্জনমূল্য থেকে যদি কম মূল্য প্রদর্শন করা হয়, তাহলে কম প্রদর্শিত মূল্যের স্বপক্ষে যথাযথ ব্যাখ্যা দাখিল না করলে বা দাখিলকৃত ব্যাখ্যা আইনানুগ না হলে কম প্রদর্শিত মূল্য এ ধারা মোতাবেক অন্যান্য উৎসের আয় হিসেবে গণ্য হবে এবং মোট আয়ের সাথে যোগ করতে হবে।
ধরা যাক, একজন করদাতা বিবেচ্য করবর্ষে একটি ফ্ল্যাট ক্রয় করেছেন। ফ্ল্যাটের মূল্য বাবদ ডেভেলপার কোম্পানিকে অর্থ প্রদান করেছেন ২ কোটি টাকা যা চেকের মাধ্যমে ও ব্যাংক ট্রান্সফারের মাধ্যমে করা হয়েছে। ফ্ল্যাটটি রেজিস্ট্রেশনের জন্য রেজিস্ট্রেশন খরচ বাবদ প্রদান করেছেন আরো ১০ লক্ষ টাকা। তাহলে ফ্ল্যাটের জন্য মোট প্রদান করেছেন ২ কোটি ১০ লক্ষ টাকা। ফ্ল্যাটটি রেজিস্ট্রেশন করা হয়েছে ৫০ লক্ষ টাকায়। রেজিস্ট্রেশন বাবদ ৫ লক্ষ খরচ প্রদর্শনপূর্বক সম্পদ ও দায় বিবরণীতে ফ্ল্যাটটির মোট মূল্য প্রদর্শন করা হয়েছে ৫৫ লক্ষ টাকা।

সার্কেল কর্মকর্তা আয়কর অধ্যাদেশ, ১৯৮৪ এর ১১৩(এফ) ধারায় ফ্ল্যাট ডেভেলপার কোম্পানির নিকট হতে ক্রেতা কর্তৃক পরিশোধিত মোট অর্থের তথ্য সংগ্রহ করেছেন। এখন করদাতার নিকট অতিরিক্ত পরিশোধিত (২.১০ কোটি – ৫৫ লক্ষ) ১.৫৫ কোটি যা অপ্রদর্শিত তার ব্যাখ্যা চাইতে হবে। করদাতা যদি ব্যাখ্যা দাখিল না করেন বা দাখিলকৃত ব্যাখ্যা আইনানুগ না হয় তাহলে উক্ত কম প্রদর্শিত অর্থ আয়কর অধ্যাদেশ, ১৯৮৪ এর ১৯(২)/৩৩ডি ধারায় অন্যান্য উৎসের আয় হিসেবে গণ্যকরত: মোট আয়ের সাথে যোগ করতে হবে।

সার্কেল কর্মকর্তাগণ এ জাতীয় অপ্রদর্শিত সম্পদকে ধারণাগত আয় হিসেবে গণ্য করার জন্য নিম্নোক্ত অনুচ্ছেদ ব্যবহার করতে পারেন:
“করদাতা আলোচ্য বর্ষে এ্যাসেট ডেভেলমেন্ট কোম্পানি কর্তৃক বাড়ি-…., সড়ক-৯, ধানমণ্ডি আ/এ, ঢাকায় নির্মিত ৯ তলা আবাসিক ভবনের ৫ম তলায় ১৬০০ বর্গফুট আয়াতন বিশিষ্ট একটি ফ্ল্যাট ক্রয় করেছেন যার দলিল নং-……, তারিখ: ২২ জুন ২০১৯ (দলিল নথিতে রক্ষিত)। করদাতা ফ্ল্যাটটির রেজি. খরচসহ মূল্য প্রদর্শন করেছেন ৫৫ লক্ষ টাকা। পরবর্তীতে আয়কর অধ্যাদেশ, ১৯৮৪ এর ১১৩(এফ) ধারায় ডেভেলপার কোম্পানি হতে সংগৃহীত তথ্যে দেখা যায়, রেজি. খরচসহ ডেভেলপার কোম্পানিকে করদাতা মোট পরিশোধ করেছেন ২ কোটি ১০ লক্ষ টাকা। কিন্তু প্রদর্শন করেছেন ৫৫ লক্ষ টাকা। করদাতা ফ্ল্যাটের মূল্য কম প্রদর্শন করেছেন (২.১০ কোট – ৫৫ লক্ষ =) ১.৫৫ কোটি টাকা। কম প্রদর্শিত মূল্যের বিষয়ে করদাতার নিকট ব্যাখ্যা চাওয়া হলে (করদাতা কোন ব্যাখ্যা দাখিল করেননি) / (করদাতা লিখিত ব্যাখ্যা দাখিল করেন যা আইনগতভাবে গ্রহণযোগ্য নয়)। এমতাব্স্থায়, ফ্ল্যাটের অপ্রদর্শিত মূল্য ১.৫৫ কোটি টাকা আয়কর অধ্যাদেশ, ১৯৮৪ এর ১৯(২)/৩৩ডি ধারায় অন্যান্য উৎসের আয় হিসেবে গণ্যকরত: উহা মোট আয়ের সাথে যোগ করা হলো ..”।
আরো একটি উদাহরণ দেয়া যাক।

ধরা যাক, একজন করদাতা প্রতি তলা ২০০ বর্গ মিটার আয়াতনের একটি ৯ তলা দালান নির্মাণ করেছেন যার নির্মাণ ব্যয় প্রদর্শন করেছেন ৳ ৩,০৯,৫০,০০০। পিডাবলিউডির ২০১৪ সালের নির্মাণ ব্যায়ের হার অনুযায়ী নির্মাণ ব্যয় আসে ৳ ৪,৫৩,১৮,৩৬৮। এক্ষেত্রে কম প্রদর্শিত নির্মাণ ব্যয় (৪,৫৩,১৮,৩৬৮ – ৩,০৯,৫০,০০০ =) ৳ ১,৪৩,৬৮,৩৬৮ আয়কর অধ্যাদেশ, ১৯৮৪ এর ১৯(২)/৩৩ডি ধারায় অন্যান্য উৎসের আয় হিসেবে গণ্য হবে।

কর নির্ধারণী আদেশে বিষয়টি নিম্নরূপভাবে লিপিবদ্ধ করা যেতে পারে:
বাড়ি নির্মাণে বিনিয়োগ পর্যালোচনা:

আলোচ্য করবর্ষে করদাতা প্রতিতলা ২০০ বর্গমিটার আয়তন বিশিষ্ট একটি ৯ তলা বাড়ি নির্মাণ সম্পন্ন করেছেন। প্রদর্শিত নির্মাণ ব্যয় ৳ ৩,০৯,৫০,০০০। বাড়িটি কর পরিদর্শক দ্বারা তদন্ত করানো হয়েছে (যদি তদন্ত করানো হয় তাহলে লিখতে হবে, না করালে কিছু উল্লেখ করার প্রয়োজন নেই)। ২০১৪ সালের পিডাবলিউডি এর নির্মাণ হার অনুযায়ী বাড়িটির বিনিয়োগ নিম্নরূপে পর্যালোচনা করা হলো:

তলা

পরিমাপ

প্রতি বর্গ মিটার খরচ (৳)

মোট খরচ (৳)

ফাউন্ডেশন

২০০ বর্গমিটার

৳ ১৭,৭১৯

৩৫,৪৩,৮০০

নিচ তলা

২০০ বর্গমিটার

১০,০৮০

২০,১৬,০০০

২য় তলা

২০০ বর্গমিটার

১৭,১১৮

৩১,৮৪,৪০০

৩য় তলা

২০০ বর্গমিটার

১৭,৩৭৪

৩৪,২৩,৬০০

৪র্থ তলা

২০০ বর্গমিটার

১৭,৬৩৫

৩৫,২৭,৬০০

৫ম তলা

২০০ বর্গমিটার

১৭,৯০০

৩৫,৮০,০০০

৬ষ্ঠ তলা

২০০ বর্গমিটার

১৮,০৭৯

৩৬,১৫,৮০০

৭ম তলা

২০০ বর্গমিটার

১৭,০১৮

৩৪,০৩,৬০০

৮ম তলা

২০০ বর্গমিটার

১৭,১৪৬

৩৪,২৯,২০০

৯ম তলা

২০০ বর্গমিটার

১৭,২৭৫

৩৪,৫৫,০০০

অন্যান্য খরচ:
গ্যাস সংযোগ-নীচ তলা

২০০ বর্গমিটার

৩৪২.২০

৮৮,৪৪০

গ্যাস সংযোগ-

২য় হতে ৯তলা)

২০০ বর্গমিটার

৳ ১,৩৬.৮৮ × ৮

২,১৯,০০৮

অভ্যন্তরীণ বিদ্যুৎ সংযোগ ব্যয়

২০০ বর্গমিটার

৳ ২,১৩৪.৪০ × ৯

৩৮,৪১,৯২০

অভ্যন্তরীণ পানি ও পয়ঃ ব্যয়

২০০ বর্গমিটার

৳ ৯০০ × ৯

১৬,২০,০০০

টাইলস করা বাবদ ব্যয়

২০০ বর্গমিটার

৳ ১,৬০০ × ৮

২৫,৬০,০০০

রিজার্ভ ট্যাংক ব্যয়

১২,০০০ লিটার

প্রতি লিটার ৳ ৬০

৭,২০,০০০

ছাদের উপর রিজার্ভ ট্যাংক ব্যয়

৪,০০০ লিটার

প্রতি লিটার ৳ ৬০

২,৪০,০০০

লিফ্ট খরচ

১২,০০,০০০

সেফটি ট্যাংক খরচ

৮,০০,০০০

জেনারেটর খরচ

৪,০০,০০০

গেট তৈরি আনুমানিক

১,৫০,০০০

বাউন্ডারি ওয়াল তৈরি

৩,০০,০০০

প্রাক্কলিত মোট নির্মাণ ব্যয়

৪,৫৩,১৮,৩৬৮

বাদ: প্রদর্শিত নির্মাণ ব্যয়

৩,০৯,৫০,০০০

অতিরিক্ত ব্যয়

১,৪৩,৬৮,৩৬৮

অতিরিক্ত বিনিয়োগের বিষয়ে করদাতার নিকট ব্যাখ্যা চাওয়া হলে করদাতা উহার কোন সন্তোষজনক ব্যাখ্যা দাখিল না করায় আয়কর অধ্যাদেশ, ১৯৮৪ এর ১৯(২)/৩৩ডি ধারায় মোট আয়ের সাথে যোগ করা হলো ..
আর একটি উদাহরণ দেয়া যাক –
একজন করদাতা আলোচ্য বর্ষে ২,৯৭২ বর্গফুটের একটি স্পেস ক্রয় মূল্য প্রদর্শন করেছেন ৳ ৭২,৫০,০০০। কিন্তু করদাতা প্রকৃতপক্ষে উক্ত স্পেস ক্রয়ের জন্য বিক্রেতাকে পরিশোধ করেছেন (রেজি. খরচসহ)
৳ ২,২৬,৭৯,৯৬০ যার স্বপক্ষে সার্কেল কর্মকর্তা ১১৩(এফ) ধারায় তথ্য-প্রমাণ সংগ্রহ করেছেন। এ কম প্রদর্শিত বিনিয়োগ আয়কর অধ্যাদেশ, ১৯৮৪ এর ১৯(২)/৩৩ডি ধারায় অন্যান্য উৎসের আয় হিসেবে বিবেচ্য। কর নির্ধারণী আদেশে বিষয়টি নিম্নরূপভাবে লিপিবদ্ধ করা যেতে পারে:
বাণিজ্যিক স্পেস ক্রয়ঃ আরবান ড্রিম, ….. নিউ ইস্কাটন, ঢাকা
করদাতা আলোচ্য করবর্ষে উক্ত দালানে ২,৯৭২ বর্গ ফুট বাণিজ্যিক স্পেস ক্রয় করেছেন (দলিল নং-….., তারিখ: ২৭ জুন ২০১১) যার মূল্য প্রদর্শন করেছেন ৳ ৭২,৫০,০০০। দালানের নির্মাতা প্রতিষ্ঠান মেসার্স আরবান ডিজাইন এন্ড ডেভেলপমেন্ট লিমিটেড এর নিকট হতে প্রাপ্ত তথ্যে দেখা যায়, করদাতা উক্ত স্পেস ক্রয় বাবদ নির্মাতা প্রতিষ্ঠানকে পরিশোধ করেছন ৳ ২,২০,৭৬,৯৬০। রেজিস্ট্রেশন খরচসহ স্পেসের মূল্য দাড়ায় (৳ ২,২০,৭৬,৯৬০ + ৳ ৬,০০,০০০ =) ৳ ২,২৬,৭৬,৯৬০। করদাতা কম বিনিয়োগ প্রদর্শন করেছেন (৳ ২,২৬,৭৬,৯৬০ – ৳ ৭২,৫০,০০০ =) ৳ ১,৫৪,২৬,৯৬০। এ কম প্রদর্শিত বিনিয়োগের বিষয়ে করদাতার নিকট লিখিতভাবে ব্যাখ্যা চাওয়া হলে (নথি নং-…………., তারিখ: ………) করদাতা এক মাস সময় চেয়ে আবেদন করেন। করদাতাকে সময় প্রদানপূর্বক ………. তারিখ শুনানির দিন ধার্য করা হলে করদাতার প্রতিনিধি জনাব ……………….. শুনানিতে হাজির হন। তিনি জানান যে, প্রকৃত ক্রয়মূল্য থেকে কম মূল্যে দলিল রেজিষ্ট্রি করায় কম মূল্য প্রদর্শন করেছেন। তিনি অতিরিক্ত বিনিয়োগকৃত অর্থের কোন ব্যাখ্যা দাখিল করতে পারেননি। এমতাবস্থায়, অতিরিক্ত অপ্রদর্শিত বিনিয়োগ ৳ ১,৫৪,২৬,৯৬০ আয়কর অধ্যাদেশ, ১৯৮৪ এর ১৯(২)/৩৩ডি ধারায় অন্যান্য উৎসের আয় হিসেবে মোট আয়ের সাথে যোগ করা হলো …………… ১,৫৪,২৬,৯৬০।
১৯ ধারায় এ জাতীয় বিনিয়োগকে আয় হিসেবে গণ্য করলে সম্পদ ও দায় বিবরণী পুনর্গঠন করতে হবে। সম্পদ ও দায় বিবরণী পুনর্গঠন করা না হলে সম্পদ ও দায় বিবরণী পর্যালেচনা যথাযথ হবে না এবং এক্ষেত্রে করদায় কম হতে পারে। পরবর্তীতে সম্পদ ও দায় বিবরণী পর্যালোচনা অন্য কোন লেখায় করব ইনশাআল্লাহ।
১৯(২) ও ১৯(৪) ধারা দুটি মূলত একই ধরনের বিষয় নিয়ে আলোচনা করেছে। পার্থক্য হচ্ছে- যদি অর্জিত সম্পদের মূল্য কম প্রদর্শন করা হয় তাহলে ১৯(২) ধারা প্রযোজ্য হবে, আর সম্পদ যদি গোপন করা হয় তাহলে ১৯(৪) ধারা প্রযোজ্য হবে।

(চলবে)

ধারণাগত আয় (Deemed Income): ধারা-১৯ এর একটি পর্যালোচনা [পর্ব-২]

ধারণাগত আয় (Deemed Income): ধারা-১৯ এর একটি পর্যালোচনা [পর্ব-২]

 আসাদ হাফিজ

নিম্নে উপ-ধারা অনুযায়ী ধারা-১৯ পর্যালোচনা করা হলো:

(1) Where any sum is found credited in the books of an Assessee maintained for any income year and the Assessee offers no explanation about the nature and source thereof, or the explanation offered is not, in the opinion of the Deputy Commissioner of Taxes, satisfactory, the sum so credited shall be deemed to be his income for that income year classifiable under the head “Income from other sources”.
  করদাতা যদি কোন দায় প্রদর্শন করেন যা যাচাইযোগ্য নয়, বা যাচাই করে যথাযথ পাওয়া না যায়, তাহলে তা ১৯(১) ধারা অনুযায়ী ‘অন্যান্য উৎসের আয়’ হিসেবে গণ্য হবে।
  ধরা যাক, একজন করদাতা ২০১৯-২০ করবর্ষে ৪ লক্ষ টাকা দায় প্রদর্শন করেছেন যার স্বপক্ষে কোন প্রমাণ দাখিলকরেননি। কর নির্ধারণকালে উক্ত ঋণের স্বপক্ষে করদাতা কোন প্রমাণ দাখিল করতে পারেননি, অথবা যেসব প্রমাণ দাখিলকরেছেন তা যথাযথ নয়, যেমন-কার নিকট হতে উক্ত ঋণ গ্রহণ করেছেন, ঋণদাতার ঋণ প্রদানের সামর্থ আছে কিনা, প্রভৃতি। এক্ষেত্রে উক্ত দায়কে আয়কর অধ্যাদেশ, ১৯৮৪ এর ১৯(১)/৩৩ডি ধারায় অন্যান্য উৎসে আয় হিসেবে গণ্যকরতে হবে।
  সার্কেল কর্মকর্তাগণ এ জাতীয় দায়কে ধারণাগত আয় হিসেবে গণ্য করার জন্য নিম্নোক্ত অনুচ্ছেদ ব্যবহার করতে পারেন:
  “করদাতা আলোচ্য বর্ষে জামানতবিহীন দায় প্রদর্শন করেছেন ৳ ৪,০০,০০০ যার স্বপক্ষে কোন প্রমাণ দাখিল করেননি। এবিষয়ে করদাতার নিকট লিখিতভাবে ব্যাখ্যা চাওয়া হলে (করদাতা কোন ব্যাখ্যা দাখিল করেননি) / (করদাতা ব্যাখ্যাদাখিল করেন তা যাচাইযোগ্য নয়।) (যদি তদন্ত করানো হয় তাহলে এর সাথে যুক্ত করা যেতে পারে – কর পরিদর্শকেরতদন্ত প্রতিবেদন পর্যালোচনায় দেখা যায়, করদাতা যাদের নিকট হতে ঋণ গ্রহণ করেছেন দাবি করেছেন সে সকলঋণদাতার কোন অস্তিত্ব খুজেঁ পাওয়া যায়নি।) সামগ্রিক বিবেচনায় প্রদর্শিত ঋণ যাচাইযোগ্য নয় বিধায় উহা যথাযথ নয়প্রতীয়মান। এমতাব্স্থায়, প্রদর্শিত ঋণ অননুমোদন করা হলো এবং আয়কর অধ্যাদেশ, ১৯৮৪ এর ১৯(১)/৩৩ডি ধারায়অন্যান্য উৎসের আয় হিসেবে গণ্যকরত: উহা মোট আয়ের সাথে যোগ করা হলো…………………………….”।
  সম্মানিত করদাতাগণকেও বিশেষভাবে লক্ষ্য রাখতে হবে, যেন এ জাতীয় দায় প্রদর্শন করা না হয়। অনেক সময় দেখাযায়, সম্পদের পরিবৃদ্ধি ও ব্যয় প্রদর্শিত আয় দ্বারা আবৃত হয় না, তখন উৎসের যতটুকু ঘাটতি থাকে সে পরিমাণকাল্পনিক দায় প্রদর্শন করা হয়ে থাকে। অনেক সময় অন্যান্য প্রাপ্তিতেও এ জাতীয় কাল্পনিক তহবিল প্রদর্শন করা হয়েথাকে। আয়কর নথি নিরীক্ষার জন্য নির্বাচনের এটি একটি অন্যতম কারণ। এ জাতীয় কাল্পনিক দায় বা তহবিল প্রদর্শন নাকরে করদাতাগণ তাদের আয়কর রিটার্ন নিরীক্ষা কার্যক্রম বহির্ভূত রাখতে পারেন।

ধারণাগত আয় (Deemed Income): আয়কর অধ্যাদেশ, ১৯৮৪ এর ধারা-১৯ এর একটি পর্যালোচনা [পর্ব-১]

ধারণাগত (deemed) আয়: আয়কর অধ্যাদেশ, ১৯৮৪ এর ধারা১৯ এর একটি পর্যালোচনা*

                            • আসাদ হাফিজ

আয়কর অধ্যাদেশ, ১৯৮৪ এর কতগুলো ধারা আছে যা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, যেমন ধারা-১৯। এ ধারাটি যেমন কর কর্মকর্তাদের বিস্তারিতভাবে জানা প্রয়োজন, তেমনি করদাতাদেরও এ ধারা সম্পর্কে সম্যক ধারণা থাকলে ভাল। এ ধারাটি সঠিকভাবে প্রয়োগ না করলে যেমন কর নির্ধারণী আদেশের ধারণাগত আয়ের অংশ বিজ্ঞ আপিল (১ম আপিল), বিজ্ঞ ট্রাইব্যুনাল (২য় আপিল) বা বিজ্ঞ সুপ্রিম কোর্টে বাতিল হয়ে যেতে পারে, তেমনি করদাতাগণেরও এ ধারাটি সম্পর্কে সঠিক ধারণা না থাকলে করদাতার কি ধরনের বিনিয়োগ বা সম্পদ (ধারণাগত) আয় হিসেবে গণ্য হতে পারে তা বুঝতে না পারার কারণে তাদের আয়কর নথি প্রায়শ:ই নিরীক্ষা কার্যক্রমের অন্তর্ভুক্ত হয়।

এখন দেখা যাক, ধারণাগত আয় কি!

আয়কর অধ্যাদেশ, ১৯৮৪ তে আয়ের সংজ্ঞা দেয়া হলেও ধারণাগত আয়ের কোন সংজ্ঞা দেয়া হয়নি। তাহলে প্রথমে দেখা যাক, আয় কি। আয়কর অধ্যাদেশ, ১৯৮৪ এর ধারা-২ এর ক্লজ (৩৪) এ আয়ের সংজ্ঞা দেয়া হয়েছে। তবে তা চূড়ান্ত কোন সংজ্ঞা নয়, সংজ্ঞাটি একজসটিভ না, ইনক্লুসিভ। ক্লজে আয়ের সরাসরি কোন সংজ্ঞা না দিয়ে আয় কি কি অন্তর্ভুক্ত করে তা উল্লেখ করা হয়েছে। বিভিন্ন অনলাইন উৎসে আয়ের যে সব সংজ্ঞা দেয়া হয়েছে তার কয়েকটি নিম্নে উল্লেখ করা হলো:

কোন নিদিষ্ট সময়কালে কোন সত্ত্বা কর্তৃক যে পরিমাণ ভোগ ও সঞ্চয় করা হয় তার সমষ্টিই আয় যা অর্থিক মূল্যে প্রকাশ করা হয়। [Smith’s financial dictionary, Wikipedia]

অন্যত্র আয় বলতে বুঝানো হয়েছে, কোন ব্যক্তি বা গৃহস্থ কর্তৃক নিদিষ্ট একটি সময়ে যে পরিমাণ মজুরি, বেতন, মুনাফা, সুদ, ভাড়া বা অন্য কোন প্রাপ্তি থাকলে তাকে আয় বলে। তবে জন অর্থনীতিতে কোন সুবিধা প্রাপ্ত হলেও তা আয় হিসেবে গণ্য হবে। যেমন-নিয়োগকারী যদি তার কর্মচারীকে থাকার জন্য বাড়ি দেয়, তবে এ সুবিধাটির আর্থিক মূল্য আয় হিসেবে গণ্য হবে। আয়কর অধ্যাদেশেও এ জাতীয় সুবিধাকে অর্থ মূল্যে রূপান্তরিত করে আয় হিসেবে গণ্য করার বিধান রয়েছে। আয়কর আইনের ভাষায় এ জাতীয় সুবিধার আর্থিক মূল্যকে ধারণাগত আয় বলা হয়ে থাকে। তবে, ধারা-১৯ এ জাতীয় আয় নিয়ে আলোচনা করেনি।

আয়কর অধ্যাদেশ, ১৯৮৪ এর ধারা-২ এর ক্লজ (৩৪) অনুযায়ী, আয় নিম্নোক্ত বিষয়সমূকে অন্তর্ভুক্ত করে (বঙ্গানুবাদ সঠিক নাও হবে পারে, ইংরেজি পাঠ পড়ার জন্য অনুরোধ করা হলো):

  • যে কোন উৎস হতে কোন আয়, প্রাপ্তি, মুনাফা বা মূলধনী লাভ যার উপর আয়কর অধ্যাদেশ মোতাবেক কর প্রদেয়;
  • আয়কর অধ্যাদেশ অনুযায়ী যে প্রাপ্তির উপর উৎসে কর আদায়যোগ্য;
  • লোকসান;
  • বাংলাদেশে উদ্ভূত বা গৃহীত কোন প্রাপ্তি বা বাংলাদেশে উদ্ভূত বা গৃহীত হয়েছে বলে ধরে নেয়া যায় এমন কোন প্রাপ্তি;
  • আয়কর অধ্যাদেশ মোতাবেক যা আয় হিসেবে বিবেচিত; প্রভৃতি।
2(34) “income” includes-
  (a) any income, receipts, profits or gains, from whatever source derived, chargeable to tax under any provision of this Ordinance;
  (b) any amount which is subject to collection or deduction of tax at source under any provision of this Ordinance;
  (c) any loss of such income, profits or gains;
  (d) the profits and gains of any business of insurance carried on by a mutual insurance association computed in accordance with paragraph 8 of the Fourth Schedule;
  (e) any sum deemed to be income, or any income accruing or arising or received, or deemed to accrue or arise or be received in Bangladesh under any provision of this Ordinance;
  (f) any amount on which a tax is imposed;
  (g) any amount which is treated as income under any provision of this Ordinance;

এখানে সাব-ক্লজ (জি) তে যে আয়ের কথা বলা হয়েছে তাকে ধারণাগত আয় বলা যেতে পারে।

আয়কর ধার্যের ভিত্তি হলো আয়। উপরোক্ত সংজ্ঞায় আয় কি তা বলা হয়েছে। আয়কর অধ্যাদেশ, ১৯৮৪ অনুযায়ী শুধুমাত্র আয়ের উপরই কর ধার্য করা যায়। সম্পদ বা বিনিয়োগের উপর সরাসরি কর ধার্য করা যায় না। সম্পদ বা বিনিয়োগের উপর কর ধার্য করতে হলে সাব-ক্লজ (জি) অনুযায়ী প্রথমে তাকে আয় হিসেবে গণ্য করতে হবে।

আয়কর অধ্যাদেশে এমন কিছু বিষয়ের উপর কর ধার্যের বিধান রয়েছে যা প্রকৃতপক্ষে করদাতার আয় নয়। আইনের প্রভিশনসমূহ যথাযথভাবে মান্য না করলে এ জাতীয় আয়ের উদ্ভব ঘটে। এ জতীয় বিষয়কেই ধারণাগত আয় (deemed income) বলা হয়েছে। এটাকে এক ধরনের শাস্তিমূলক আয়ও বলা যায়। আয়কর অধ্যাদেশ, ১৯৮৪ এর ধারা-১৯ এ এ জাতীয় আয় নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে।

আয়কর অধ্যাদেশ, ১৯৮৪ এর ১৯ ধারায় বর্তমানে ৩০টি কার্যকরী উপ-ধারা রয়েছে যার মধ্যে ৩টি গৃহসম্পত্তির আয় [১৯(২২), ১৯(২২এ) ও ১৯(৩০)][তবে ২৪ ধারায় এ উপ-ধারা তিনটি অন্তর্ভূক্ত করা হয়নি, যেমনটি করা হয়েছে কৃষি আয় (ধারা-২৬), ব্যবসা আয় (ধারা-২৮) ও অন্যান্য উৎসের আয়ের (ধারা-৩৩) ক্ষেত্রে], ২টি কৃষি আয় [১৯(১৭) ও ১৯(১৯)], ৫টি ব্যবসা আয় [১৯(১৫), ১৯(১৬), ১৯(১৮), ১৯(২০) ও ১৯(২৩)] ও ১৭টি অন্যান্য উৎসের আয় [১৯(১), ১৯(২), ১৯(৩), ১৯(৪), ১৯(৫), ১৯(৮), ১৯(৯), ১০(১০), ১৯(১১), ১৯(১২), ১৯(১৩), ১৯(২১), ১৯(২৪), ১৯(২৭), ১৯(২৯), ১৯(৩১) ও ১৯(৩২)] হিসেবে বিবেচিত। তবে আমি আমার আলোচনায় বিলুপ্ত উপ-ধারা (২১বি) সহ ৩১টি উপ-ধারা আলোচনা করব। উপ-ধারা (২১বি) ধারা-১৯ হতে বিলোপ করা হলেও তা ধারা-৮২বিবি তে সংযুক্ত করা হয়েছে, যদিও আমি মনে করি তা ধারা-১৯ এ থাকাই অধিক যুক্তিযুক্ত ছিল। ৮২বিবি(১২) তে সংযুক্ত এ ধারার আয় বর্তমানে ব্যবসা আয় হিসেবে বিবেচিত [যদিও ২৮ ধারায় (ব্যবসা আয়) এ আয়ের বিষয়ে উল্লেখ নেই] যা পূর্বে অন্যান্য উৎসের আয় হিসেবে বিবেচিত ছিল। অন্যান্য উপ-ধারাসমূহ মূলত: বিভিন্ন বিষয়ের ব্যাখ্যা।

 

নিম্নে উপ-ধারা অনুযায়ী ধারা-১৯ পর্যালোচনা করা হলো:

(চলবে)

* এ লেখার বক্তব্য লেখকের একান্ত ব্যক্তিগত। কোন ব্যাখ্যা যদি আইনের সাথে সাংঘর্ষিক হয়, তাহলে তা তাৎক্ষণিক বাতিল বলে গণ্য হবে। এ লেখাকে কোথাও রেফারেন্স হিসেবে ব্যবহার করা যাবে না। শুধুমাত্র সাধারণ ধারণা লাভের জন্য।

অর্থ আইন, ২০২১ এর মাধ্যমে আয়কর আইনে আনীত পরিবর্তনসমূহ

অর্থ আইন, ২০২১ এর মাধ্যমে আয়কর অধ্যাদেশ, ১৯৮৪ তে আনীত পরিবর্তনসমূহ
 আসাদ হাফিজ
২০২১-২২ করবর্ষের জন্য প্রযোজ্য কর হার

১. ব্যক্তি করদাতা (অনিবাসী বাংলাদেশিসহ), অংশীদারী ফার্ম এর আয়ের উপর প্রযোজ্য কর হার: [পূর্ববর্তী বছরের অনুরূপ]

ক্রমিক মোট আয়   কর হার কর
১.১ সাধারণ করদাতার প্রথম ৩,০০,০০০ ০%
১.২ মহিলা করদাতার প্রথম ৩,৫০,০০০ ০%
১.৩ ৬৫ বছর বা তদূর্ধ্ব পুরুষ করদাতার প্রথম ৩,৫০,০০০ ০%
১.৪ তৃতীয় লিঙ্গের করদাতা প্রথম ৩,৫০,০০০ ০%
১.৫ প্রতিবন্ধী করদাতার প্রথম ৪,৫০,০০০ ০%
১.৬ গেজেটভুক্ত যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা করদাতার প্রথম ৪,৭৫,০০০ ০%
১.৭ প্রতিবন্ধী ব্যক্তির পিতা/মাতা/আইনানুগ অভিভাবক – যেকোন একজনের প্রাপ্যকরমুক্ত সীমার অতিরিক্ত
৳ ৫০,০০০
০%
১.৮ শুধুমাত্র কৃষি হতে আয় থাকলে প্রাপ্য করমুক্ত সীমার অতিরিক্ত ২ লক্ষ টাকা ০%
উপরোক্ত সকল করদাতার করমুক্ত সীমা বাদ দেয়ার পর
মোট আয়ের পরবর্তী ১,০০,০০০ ৫% ৫,০০০
মোট আয়ের পরবর্তী ৩,০০,০০০ ১০% ৩০,০০০
মোট আয়ের পরবর্তী ৪,০০,০০০ ১৫% ৬০,০০০
মোট আয়ের পরবর্তী ৫,০০,০০০ ২০% ১,০০,০০০
মোট আয়ের অবশিষ্ট অংক ২৫%

২. বিনিয়োগজনিত কর রেয়াত: পূর্ববর্তী বছরের অনুরূপ [শুধুমাত্র ব্যক্তি শ্রেণির করদাতার জন্য প্রযোজ্য]

প্রাপ্য অংক: নিম্নের তিনটির মধ্যে যেটি কম-
(ক) প্রকৃত বিনিয়োগ,
(খ) মোট আয়ের [সাধারণ করহার প্রযোজ্য এমন] ২৫% এবং
(গ) ১ কোটি টাকা।

অর্থ আইন, ২০২১ এর মাধ্যমে আয়কর অধ্যাদেশ, ১৯৮৪ এর ৪৪ ধারা সংশোধন করে রেয়াতের সবোর্চ্চ সীমা ১.৫ কোটি হতে কমিয়ে ১ কোটি করা হয়েছে।

সাধারণ করহার বলতে বুঝাবে, যে আয়ের উপর ০%, ৫%, ১০%, ১৫%, ২০% ও ২৫% – এ ক্রমে কর আরোপিত হয়। উদাহরণস্বরূপ, একজন করদাতার বেতন আয় রয়েছে ৳ ৬,০০,০০০; গৃহসম্পত্তি আয় ৳ ৩,০০,০০০ এবং ব্যাংক সুদ রয়েছে ৳ ২,০০,০০০। এ সকল আয়ের উপর উপরোক্ত ক্রমবর্দ্ধমান হারে কর আরোপিত হবে। এ ধরণের আয়েকই সাধারণ করহার প্রযোজ্য এমন আয় বলা হয়ে থাকে। রেয়াতের জন্য মোট আয়ের ২৫% গণনা করার সময় শুধুমাত্র এ জাতীয় আয়কে বিবেচনা করতে হবে।

পক্ষান্তরে, করমুক্ত আয় (যেমন- রেমিটেন্স, সফটওয়ার ব্যবসা হতে আয়, প্রভৃতি), হ্রাসকৃত হারে আয় (যেমন- সঞ্চয়পত্রের সুদ, মৎস চাষ হতে আয়, হাঁস-মুরগীর খামার হতে আয়, প্রভৃতি), ৮২সি ধারায় ন্যূনতম করদায়যুক্ত আয় (যেমন- ঠিকাদারী আয়, রফতানি হতে আয়, জমি বিক্রয় হতে লাভ, প্রভৃতি) বাদ দিতে হবে।

উদাহরণ-
জনাব আনোয়ার হোসেনের নিম্নরূপ আয় রয়েছে:
বেতন আয় ৳ ৬,০০,০০০; গৃহসম্পত্তি আয় ৳ ৩,০০,০০০; ব্যাংক সুদ ৳ ২,০০,০০০; সঞ্চয়পত্রের সুদ ৳ ১,০০,০০০ এবং মৎস চাষ হতে আয় ৳ ১০,০০,০০০। মোট আয় – ৳ ২২,০০,০০০।

উপরোক্ত আয়ের মধ্যে নিয়মিত করহার প্রযোজ্য এমন আয় – বেতন আয় ৳ ৬,০০,০০০; গৃহসম্পত্তি আয় ৳ ৩,০০,০০০; ব্যাংক সুদ ৳ ২,০০,০০০; মোট ৳ ১১,০০,০০০। এবং হ্রাসকৃত করহার প্রযোজ্য এমন আয় – সঞ্চয়পত্রের সুদ ৳ ১,০০,০০০ এবং মৎস চাষ হতে আয় ৳ ১০,০০,০০০; মোট ৳ ১১,০০,০০০।

বিবেচ্য বর্ষে রেয়াতের জন্য বিবেচিত বিনিয়োগ:
ভবিষ্য তহবিল – ৳ ১,২০,০০০; ডিপিএস – ৳ ৬০,০০০; সঞ্চয়পত্র ক্রয় – ৳ ২,০০,০০০; মোট বিনিয়োগ ৳ ১,৬০,০০০।

প্রকৃত বিনিয়োগ – ৩,৮০,০০০
মোট আয়ের ২৫% [১১,০০,০০০ টাকার ২৫%] – ২,৭৫,০০০

সুতরাং রেয়াতের জন্য প্রাপ্য অংক – ২,৭৫,০০০

রেয়াতের হার:
(ক) মোট আয় ১৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত – প্রাপ্য অংকের ১৫%;
(খ) মোট আয় ১৫ লক্ষ টাকার উর্দ্ধে – প্রাপ্য অংকের ১০%।

রেয়াতের হার নিরূপণের ক্ষেত্রে মোট আয় বলতে সাধারণ করহার প্রয়োজ্য এমন আয়, হ্রাসকৃত করহার প্রযোজ্য এমন আয় এবং করমুক্ত আয়, সকল আয়ের যোগফলকে মোট আয় বুঝাবে।

উপরোক্ত করদাতার মোট আয় ৳ ২২,০০,০০০। এক্ষেত্রে করদাতার রেয়াতের হার হবে প্রাপ্য অংকের ১০%। সুতরাং রেয়াতের পরিমাণ – ২,৭৫,০০০ টাকার ১০% = ৳ ২৭,৫০০।

প্রদেয় কর হতে রেয়াত বাদ দিয়ে নিট প্রদেয় কর যদি শূন্য বা ঋণাত্মক হয়, তবুও করদাতাকে নিম্নরূপ ন্যূনতম কর প্রদান করতে হবে:

ক্রমিক করদাতার এলাকা ন্যূনতম কর

ক্রমিক

করদাতার এলাকা

ন্যূনতম কর

(ক)

ঢাকা ও চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন

৳ ৫,০০০

(খ)

অন্যান্য সিটি করপোরেশন

৳ ৪,০০০

(গ)

অন্যান্য এলাকা

৳ ৩,০০০

৩. সবচেয়ে কম উন্নত বা স্বল্পোন্নত এলাকায় ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্পের দ্রব্যাদি উৎপাদনে নিয়োজিত করদাতাগণ নিম্নরূপ কর রেয়াত পাবেন:

ক্রমিক

বিবরণ

রেয়াতের পরিমাণ

(ক)

উৎপাদন পূর্ববর্তী বছরের তুলনায় ১৫% এর অধিক, তবে ২৫% এর অধিকনয়

উক্ত আয়ের উপর প্রদেয় করের ৫%

(খ)

উৎপাদন পূর্ববর্তী বছরের তুলনায় ২৫% এর অধিক

উক্ত আয়ের উপর প্রদেয় করের ১০%

৪. সারচার্জ: শুধুমাত্র ব্যক্তি শ্রেণির করদাতাদের জন্য প্রযোজ্য
সারচার্জের ক্ষেত্রে অর্থ আইনে ২টি পরিবর্তন এসেছে। এক- ন্যূনতম সারচার্জ বাতিল করা হয়েছে। দুই- সারচার্জের স্তর কমিয়ে ৫টিতে নামিয়ে আনা হয়েছে। এখানে বিশেষভাবে মনে রাখতে হবে, সারচার্জ আরোপিত হয় প্রদেয় করের উপর। একজন করদাতার সম্পদের পরিমাণ যদি সারচার্জ আরোপের উপযুক্ত হয়, কিন্তু তার করযোগ্য কোন আয় নেই, অথাৎ কোন কর প্রদেয় হয়নি, তাহলে তার সম্পদের পরিমাণ যাই হোক না কেন, সারচার্জ হবে না।

ক্রমিক

নিট সম্পদের পরিমাণ

সারচার্জের হার

(প্রদেয় করের)

৩ কোটি টাকা পর্যন্ত

০%

  কিন্তু নিজ নামে একের অধিকর মোটর গাড়ি থাকলে

১০%

  বা সিটি করপোরেশন এলাকায় ৮,০০০ বর্গফুটের অধিক গৃহসম্পত্তিথাকলে

১০%

৩ কোটি টাকার অধিক হতে ১০ কোটি টাকা পর্যন্ত

১০%

১০ কোটি টাকার অধিক হতে ২০ কোটি টাকা পর্যন্ত

২০%

২০ কোটি টাকার অধিক হতে ৫০ কোটি টাকা পর্যন্ত

৩০%

৫০ কোটি টাকার অধিক

৩৫%

এছাড়া, তামাকজাত পণ্য উৎপাদনকারী করদাতার উক্ত ব্যবসার আয়ের উপর নিয়মিত করের অতিরিক্ত ২.৫% সারচার্জ আরোপিত হবে।

৫. কোম্পানি ও ব্যক্তি-সংঘ ব্যতীত নিম্নোক্ত অন্যান্য শ্রেণির করদাতাদের মোট আয়ের উপর নিম্নরূপ হারে আয়কর আরোপিত হবে:

ক্রমিক

করদাতার শ্রেণি

কর হার

কোম্পানি ও ব্যক্তি-সংঘ ব্যতীত অনিবাসী সকল বিদেশি করদাতা

৩০%

তামাকজাত পণ্য উৎপাদনকারী করদাতার (কোম্পানি ব্যতীত) উক্ত আয়ের আয়ের উপর

৪৫%

কোম্পানি ব্যতীত ব্যাক্তি-সংঘ, আইনের দ্বারা সৃষ্ট কৃত্রিম ব্যক্তি ও অন্যান্য করারোপযোগ্য সত্তার ক্ষেত্রে

৩০%

সমবায় সমিতি আইন, ২০০১ অনুযায়ী নিবন্ধিত সমবায় সমিতির আয়ের উপর

১৫%

বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয, বেসরকারি মেডিকেল কলেজ, বেসরকারি ডেন্টাল কলেজ, বেসরকারি ইনজিনিয়ারিং কলেজ ও কেবলমাত্র তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়ে শিক্ষাদানে নিয়োজিত বেসরকারি কলেজের আয়ের উপর

১৫%

৬. কোম্পানি কর হার [মূলধনী আয় ব্যতীত]:

ক্রমিক

করদাতার ধরণ কর হার

স্টক একচেঞ্জে তালিকাভুক্ত কোম্পানি

২২.৫%

স্টক একচেঞ্জে তালিকাভুক্ত নয় এমন কোম্পানি ও আয়কর অধ্যাদেশ, ১৯৮৪ এর ধারা-২(২০) এ যাদের কোম্পানির অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে

[তবে এরূপ কোম্পানি পরিশোধিত মূলধনের ন্যূনতম ২০% আইপিও এর মাধ্যমে হস্তান্তর করে তাহলেসংশ্লিষ্ট বর্ষে প্রদেয় আয়করের উপর ১০% রেয়াত লাভ করবে।]

৩০%

এক ব্যক্তির কোম্পানি

২৫%

ব্যাংক, বিমা, আর্থিক প্রতিষ্ঠান

[স্টক একচেঞ্জে তালিকাভুক্ত]

৩৭.৫%

ব্যাংক, বিমা, আর্থিক প্রতিষ্ঠান

[স্টক একচেঞ্জে তালিকাভুক্ত না হলে]

৪০%

মার্চেন্ট ব্যাংক

৩৭.৫%

তামাকজাত পণ্য প্রস্তুতকারী কোম্পানি

৪৫%

তামাকজাত পণ্য প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠানকে নিয়মিত করের অতিরিক্ত তামাকজাত পণ্যের আয়ের উপর ২.৫% হারে সারচার্জ পরিশোধ করতে হবে।

মোবাইল ফোন অপারেটর কোম্পানি

[তবে এরূপ কোম্পানি পরিশোধিত মূলধনের ন্যূনতম ২০% আইপিও এর মাধ্যমে হস্তান্তর করে তাহলেসংশ্লিষ্ট বর্ষে প্রদেয় আয়করের উপর ১০% রেয়াত লাভ করবে।]

৪৫%

মোবাইল ফোন অপারেটর কোম্পানি

[যদি পরিশোধিত মূলধনের ন্যূনতম ১০% শেয়ার, যার মাধ্যে প্লেসমেন্ট এর মাধ্যমে ৫% শেয়ারের অধিকনয়, হস্তান্তর করে]

[তবে এরূপ কোম্পানি পরিশোধিত মূলধনের ন্যূনতম ২০% আইপিও এর মাধ্যমে হস্তান্তর করে তাহলেসংশ্লিষ্ট বর্ষে প্রদেয় আয়করের উপর ১০% রেয়াত লাভ করবে।]

৪০%

১০

ঘোষিত এবং পরিশোধিত লভ্যাংশের উপর

২০%

৭. অপ্রদর্শিত আয়/বিনিয়োগ ঘোষণা সংক্রান্ত
========================
পূর্ববর্তী বছরে অপ্রদর্শিত বিনিয়োগের যে সুযোগ দেয়া হয়েছিল, আলোচ্য বর্ষে তা কিছুটা সংশোধনপূর্বক করহার বৃদ্ধি করে বহাল রাখা হয়েছে। এ দুটি ধারা মোতাবেক অপ্রদর্শিত নগদ তহবিলকে নির্ধারিত হারে কর প্রদান করে ঘোষণা করা যাবে। ঘোষিত নগদ তহবিলের বিপরীতে কোন সুনির্দিষ্ট সম্পদ/বিনিয়োগ প্রদর্শনের প্রয়োজন নেই।

৮. ১৯এএএএ: শেয়ার বাজারে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে বিশেষ প্রণোদনা

ব্যক্তি শ্রেণির করদাতা ১ জুলাই ২০২১ হতে ৩০ জুন ২০২২ এর মধ্যে শেয়ার বাজারে বিনিয়োগ করলে এবং বিনিয়োগকৃত অংকের উপর বিনিয়োগের ৩০ দিনের মধ্যে ২৫% কর ও ৫% জরিমানা পরিশোধ করলে বাংলাদেশের কোন কর্তৃপক্ষ উক্ত বিনিয়োগের উৎস নিয়ে কোন প্রশ্ন উত্থাপন করতে পারবে না।

বিনিয়োগকারী নির্ধারিত ফরমে প্রযোজ্য কর ও জরিমানার পে-অর্ডারসহ সংশ্লিষ্ট উপ কর কমিশনারের নিকট ঘোষণা করবেন।

তবে শেয়ার বাজরে বিনিয়োগের দিন থেকে পরবর্তী ১ বছরের মধ্যে উক্ত বিনিয়োগকৃত অর্থ শেয়ার বাজার হতে প্রত্যাহার করা যাবে না। যদি প্রত্যাহার করা হয়, তাহলে যে পরিমাণ প্রত্যাহার করা হবে তার উপর ১০% হারে জরিমানা প্রদেয় হবে। তবে করদাতা শেয়ার কেনা-বেচা করতে পারবেন।

এ জাতীয় বিনিয়োগ ঘোষণার পূর্বেই যদি সংশ্লিষ্ট করদাতার বিরুদ্ধে আয়কর আইনে বা অন্য যে কোন আইনে কোন প্রসিডিং চলমান থাকে, তবে এ ধারায় তার বিনিয়োগ ঘোষণা গ্রহণযোগ্য হবে না।

এ ধারায় ঘোষিত বিনিয়োগ পরবর্তী বছর অর্থাৎ ২০২২-২৩ করবর্ষে সম্পদ বিবরণীর সংশ্লিষ্ট কলামে প্রদর্শন করতে হবে এবং বিনিয়োগকৃত অংক অর্জিত সম্পদের উৎস কলামে প্রদর্শন করতে হবে।

৯. ১৯এএএএএ: অপ্রদর্শিত সম্পদ ও নগদ সমতুল্য

অপ্রদর্শিত জমি, ফ্ল্যাট, বাড়ি, নগদ, ব্যাংক জমা, এফডিআর, সঞ্চয়পত্র, বন্ড ও যে কোন ধরনের আর্থিক স্কীমে বিনিয়োগ যা প্রদর্শন করা হয়নি, এ জাতীয় অপ্রদর্শিত বিনিয়োগ নির্ধারিত হারে কর ও ৫% জরিমানা প্রদান করে প্রদর্শন করা যাবে। এসব ক্ষেত্রে বিনিয়োগের উৎস নিয়ে বাংলাদেশের কোন কর্তৃপক্ষ কোন প্রশ্ন উত্থাপন করতে পারবে না। এ ধারায় ঘোষিত সম্পদ ১ জুলাই ২০২১ হতে ৩০ জুন ২০২২ এর মধ্যে রিটার্ন বা সংশোধিত রিটার্ন দাখিলের মাধ্যমে প্রদর্শন করতে হবে।

এ জাতীয় বিনিয়োগ ঘোষণার পূর্বেই যদি সংশ্লিষ্ট করদাতার বিরুদ্ধে আয়কর আইনে বা অন্য যে কোন আইনে কোন কার্যক্রম চলমান থাকে, তবে এ ধারায় তার বিনিয়োগ ঘোষণা গ্রহণযোগ্য হবে না।

ক্রম.

সম্পত্তির বিবরণ (জমি)

করহার (৳)

(প্রতি বর্গমিটারে)

১.

জমি – গুলশান, বনানী, বারিধারা, মতিঝিল, দিলকুশা

২০,০০০

২.

জমি – ঢাকার ধানমণ্ডি, ডিওএইচএস, মহাখালী, লালমাটিয়া, উত্তরা, পূর্বাচল, বসুন্ধরা, ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট, সিদ্ধেশ্বরী, কাওরানবাজার, বিজয়নগর, ওয়ারি, সেগুনবাগিচা ও নিকুঞ্জ এবং চট্টগ্রামের পাঁচলাইশ, খুলশী,আগ্রাবাদ ও নাসিরাবাদ।

১৫,৫০০

৩.

জমি – ১ ও ২ নং ক্রমিক বাদে যে কোন সিটি করপোরেশন

৫,০০০

৪.

জমি – পৌরসভা বা জেলা সদর

১,৫০০

৫.

জমি – অন্য যে কোন স্থান

৫০০

সম্পত্তির বিবরণ (বাণিজ্যিক বা আবাসিক ফ্ল্যাট/বাড়ি)

করহার (৳)

(প্রতি বর্গমিটারে)

১.

ফ্ল্যাট/বাড়ি – গুলশান, বনানী, বারিধারা, মতিঝিল, দিলকুশা [২০০ বমি এর কম]

৪,০০০

২.

ফ্ল্যাট/বাড়ি – গুলশান, বনানী, বারিধারা, মতিঝিল, দিলকুশা [২০০ বমি এর বেশি]

৬,০০০

৩.

ফ্ল্যাট/বাড়ি – ঢাকার ধানমণ্ডি, ডিওএইচএস, মহাখালী, লালমাটিয়া, উত্তরা, বসুন্ধরা, ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট, সিদ্ধেশ্বরী, কাওরানবাজার, বনশ্রী, বিজয়নগর, ওয়ারি, সেগুনবাগিচা, নিকুঞ্জ এবং চট্টগ্রামের পাঁচলাইশ, খুলশী, আগ্রাবাদ, নাসিরাবাদ [২০০ বমি এর কম]

৩,০০০

৪.

ফ্ল্যাট/বাড়ি – ঢাকার ধানমণ্ডি, ডিওএইচএস, মহাখালী, লালমাটিয়া, উত্তরা, বসুন্ধরা, ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট, সিদ্ধেশ্বরী, কাওরানবাজার, বনশ্রী, বিজয়নগর, ওয়ারি, সেগুনবাগিচা, নিকুঞ্জ এবং চট্টগ্রামের পাঁচলাইশ, খুলশী, আগ্রাবাদ, নাসিরাবাদ [২০০ বমি এর বেশি]

৩,৫০০

৫.

ফ্ল্যাট/বাড়ি – ১, ২, ৩ ও ৪ নং ক্রমিক বাদে যে কোন সিটি করপোরেশন [১২০ বমি এর কম]

৭০০

৬.

ফ্ল্যাট/বাড়ি – ১, ২, ৩ ও ৪ নং ক্রমিক বাদে যে কোন সিটি করপোরেশন [১২০-২০০ বমি]

৮৫০

৭.

ফ্ল্যাট/বাড়ি – ১, ২, ৩ ও ৪ নং ক্রমিক বাদে যে কোন সিটি করপোরেশন [২০০ বমি এর বেশি]

১,৩০০

৮.

ফ্ল্যাট/বাড়ি – জেলা সদরের পৌরসভা [১২০ বমি এর কম]

৩০০

৯.

ফ্ল্যাট/বাড়ি – জেলা সদরের পৌরসভা [১২০-২০০ বমি]

৪৫০

১০.

ফ্ল্যাট/বাড়ি – জেলা সদরের পৌরসভা [২০০ বমি এর বেশি]

৬০০

১১.

ফ্ল্যাট/বাড়ি – ১-১০ নং ক্রমিক বাদে যে কোন স্থানে [১২০ বমি এর কম]

২০০

১২.

ফ্ল্যাট/বাড়ি – ১-১০ নং ক্রমিক বাদে যে কোন স্থানে [১২০-২০০ বমি]

৩০০

১৩.

ফ্ল্যাট/বাড়ি – ১-১০ নং ক্রমিক বাদে যে কোন স্থানে [২০০ বমি এর বেশি]

৫০০

  নগদ ও নগদ সমতুল্য

করহার

১.

নগদ, ব্যাংক জমা, আর্থিক স্কীম বা ইন্সট্রুমেন্ট, যে কোন ধরণের জমা, সঞ্চয়ী জমা, সঞ্চয়পত্র

২৫%

১০. ১৯এএএএএএ – নতুন শিল্পে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে বিশেষ সুবিধা

আয়কর অধ্যাদেশ, ১৯৮৪ এর ১৯এএএএএএ ধারা সংযোজনের মাধ্যমে নতুন শিল্পে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে বিশেষ সুধিধা প্রদান করা হয়েছে। এ ধারার অধীন ব্যক্তি করদাতা যদি নতুন শিল্প প্রতিষ্ঠানে বিনিয়োগকৃত অংকের উপর ১০% কর পরিশোধ করলে বাংলাদেশের কোন কর্তৃপক্ষ উক্ত বিনিয়োগের উৎস নিয়ে কোন প্রশ্ন উত্থাপন করতে পারবে না। ১ জুলাই ২০২১ হতে ৩০ জুন ২০২২ এর মধ্যে এ জাতীয় বিনিয়োগ করতে হবে। পে-অর্ডার বা স্বয়ংক্রিয় চালানের মাধ্যমে এ কর পরিশোধ করতে হবে।

১১. বেতন বা সম্মানী নগদে পরিশোধের সীমা বৃদ্ধি [ধারা ৩০(আই)]
অর্থ আইন, ২০২১ এর মাধ্যমে আয়কর অধ্যাদেশ, ১৯৮৪ এর ৩০(আই) ধারা সংশোধনের মাধ্যমে বেতন বা সম্মানী নগদে পরিশোধের সীমা ৳ ১৫,০০০ হতে বৃদ্ধি করে ৳ ২০,০০০ করা হয়েছে।আলোচ্য বর্ষে বেতন বা সম্মানী খাতে ২০,০০০ টাকার উর্দ্ধে পরিশোধের ক্ষেত্রে বেতন/সম্মানী প্রদানকারী বেতন/সম্মানী গ্রহণকারীর ব্যাংক হিসাবে প্রেরণ করবেন। অন্যথায় ব্যবসায়িক খরচ হিসেবে উহা অননুমোদিত হবে।

১২. কাঁচামালের ক্রময়মূল্য ব্যাংকের মাধ্যমে পরিশোধের বিধান [ধারা ৩০(আইআই) সংযোজন]
অর্থ আইন, ২০২১ এর মাধ্যমে আয়কর অধ্যাদেশ, ১৯৮৪ এ নতুন ক্লজ ৩০(আইাআই) সংযোজনের মাধ্যমে ৫ লক্ষ টাকার উর্দ্ধে কাঁচামাল ক্রয়ের ক্ষেত্রে ক্রয়মূল্য ব্যাংকের মাধ্যমে পরিশোধের বিধান করা হয়েছে। পূর্বে কাঁচামালের মূল্য বাবদ যেকোন অংক নগদে পরিশোধ করা যেত। বর্তমান বিধান অনুযায়ী ৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত কাঁচামালের মূল্য নগদে পরিশোধ করা যাবে। ৫ লক্ষ টাকার অধিক হলে ব্যাংকের মাধ্যমে পরিশোধ না হলে এ ক্লজ মোতাবেক উক্ত খরচ খরচ হিসেবে অনুমোদনযোগ্য হবে না।

এখন প্রশ্ন হলো, ৫ লক্ষ টাকা কি সাকুল্যে? নাকি প্রত্যেক বিল/ভাউচারের বিপরীতে ৫ লক্ষ টাকা নগদে পরিশোধ করা যাবে? এ প্রশ্নের সঠিক উত্তর পাওয়া যাবে পরিপত্র হতে। তবে আমার মতামত হলো, কাঁচামালের মূল্য বাবদ সাকুল্যে ৫ লক্ষ টাকা নগদে পরিশোধ করা যাবে।

১৩. ৫২ ধারা সংশোধন
৫২ ধারার উপধারা (১) এর প্রভাইসোতে ক্লজ (বিবি) সংযোজনের মাধ্যমে ঠিকাদারী বিল বাংলাদেশ ব্যাংক অনুমোদিত কোন আর্থিক চ্যানেলে গৃহীত না হলে উৎসে কর কর্তনের হার ৫০% বেশি হবে।

৫২ ধারায় কর কর্তনের হার সংক্রান্ত বিধি-১৬ তে পরিবর্তন আনা হয়েছে। বিধি-১৬ প্রতিস্থাপনের মাধ্যমে উৎসে কর কর্তনের স্তর কমিয়ে ৩টিতে নামিয়ে আনা হয়েছে। ৫২ ধারায় পরিবর্তিত কর কর্তনের হার নিম্নরূপ:

ক্রমিক

ভিত্তিমূল্য

কর্তনের হার

৫০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত

৩%

৫০ লক্ষ ১ টাকা – ২ কোটি টাকা

৫%

২ কোটি টাকার উর্দ্ধে

৭%

  নিম্নোক্ত প্রতিষ্ঠান কর্তৃক বিল গ্রহণের ক্ষেত্রে

মোট বিলের উপর

তৈল বিপণনকারী কোম্পানি কর্তৃক তৈল সরবরাহের ক্ষেত্রে (মোট মূল্যের উপর)

০.৬০%

ডিলার বা এজেন্ট কর্তৃক তৈল সরবরাহের ক্ষেত্রে (পট্রোল পাম্প ব্যতীত)

১%

অয়েল রিফাইনারী কর্তৃক তৈল সরবরাহের ক্ষেত্রে

৩%

গ্যাস সঞ্চালন কোম্পানির ক্ষেত্রে

৩%

গ্যাস বিতরণকারী কোম্পানির ক্ষেত্রে

৩%

সিমেন্ট, লোহা, লৌহজাত পণ্য (এমএস বিলেট ব্যতীত) উৎপাদনে নিয়োজিত প্রতিষ্ঠান

২%

এমএস বিলেট উৎপাদনে নিয়োজিত প্রতিষ্ঠান

০.৫%

স্থানীয়ভাবে এমএস স্ক্রাপ উৎপাদনে নিয়োজিত প্রতিষ্ঠান

০.৫%

ধান, গম, আলু, পিঁয়াজ, রসুন, মটর ডাল, ছোলা, মসুর ডাল, আদা, হলুদ, শুকনো মরিচ, ভুট্টা, আটা, ময়দা, লবণ, ভোজ্য তৈল, চিনি, কালো গোল মরিচ, দারুচিনি, এলাচ, লবঙ্গ, খেজুর, তেজপাতা, পাট, তুলা, সুতা ও সব ধরণের ফল সরবরাহ

২%

টিআইএন না থাকলে বা বিল বাংলাদেশ ব্যাংক অনুমোদিত কোন চ্যানেলে গ্রহণ না করলে করের হার ৫০% বেশি হবে।

১৪. ৫২ডিডি সংশোধন: ওয়ার্কাস প্রফিট পার্টিসিপেশন ফান্ড হতে উৎসে কর্তন
ওয়ার্কাস প্রফিট পার্টিসিপেশন ফান্ড হতে প্রাপ্ত যেকোন অংকের উপর ৫% কর কর্তনের বিধান ছিল। পরিবর্তিত বিধানে ৳ ২৫,০০০ পর্যন্ত কর্তন বহির্ভূত রাখা হয়েছে। এছাড়াও যাদের করযোগ্য আয় নেই, তাদের প্রাপ্তিও কর্তন বহির্ভূত রাখা হয়েছে। ৬ষ্ঠ তফসিলের পার্ট-এ এর প্যারা-২১ এর ক্লজ (ডি) মোতাবেক প্রাপকের হাতে ৳ ৫০,০০০ পর্যন্ত করমুক্ত।

১৫. ৫২কিউ এর প্রোভাইসো পরিবর্তন:
৫২কিউ এর প্রোভাইসো পরিবর্তনের মাধ্যমে উৎপাদন, প্রসেস বা প্রক্রিয়াজাতকরণ, পূর্তকর্ম, নির্মাণ, প্রকৌশল কাজ বা এ জাতীয় কাজের মাধ্যমে বিদেশ হতে বিল প্রাপ্ত হলে উহার উপর ৭.৫% হারে কর কর্তন প্রযোজ্য হবে।

১৬. পণ্য আমদানির বিপরীতে অগ্রিম আয়কর সংগ্রহ
আমদানিকৃত পণ্যের আমদানি মূল্যের বিপরীতে অগ্রিম আয়কর সংগ্রহের বিধান পূর্বেও ছিল, তবে তাতে সর্বোচ্চ হার উল্লেখ ছিল না। পরিবর্তিত বিধানে আমদানি মূল্যের বিপরীতে সর্বোচ্চ ২০% হারে অগ্রিম আয়কর সংগ্রহ করা যাবে। আয়কর বিধিমালা, ১৯৮৪ এর বিধি-১৭এ তে আমদানিকৃত পণ্যের বিপরীতে অগ্রিম করের হার উল্লেখ রয়েছে।

১৭. ৫৩বি প্রতিস্থাপন: জনশক্তি রফতানির বিপরীতে অগ্রিম আয়কর সংগ্রহ
পূর্বে অভিবাসন অধ্যাদেশ, ১৯৮২ মোতাবেক জনশক্তি রফতানির বিপরীতে অগ্রিম আয়কর সংগ্রহ করা হতো। পরিবর্তিত বিধান মোতাবেক, জনশক্তি রফতানিকারক প্রতিষ্ঠান জনশক্তি রফতানির অনুমোদনের জন্য যখন মহাপরিচালক, জনশক্তি কর্মস্থান অধিদফতরে আবেদন করবেন, তখন আবেদনের সাথে প্রাপ্য সার্ভিস চার্জ বা ফি’র ১০% অগ্রিম আয়কর হিসেবে জমা দেয়ার চালান বা প্রমাণ দাখিল করবেন। আর লাইসেন্স গ্রহণ বা নবায়ন আবেদনের সাথে ৳ ৫০,০০০ অগ্রিম আয়কর পরিশোধের চালান দাখিল করবেন।

১৮. ৫৩সি: নিলামে বিক্রয় হতে অগ্রিম আয়কর সংগ্রহ
পূর্বে নিলামে ক্রেতার ক্রয় মূল্যের ৭.৫% অগ্রিম আয়কর আদায়ের বিধান ছিল। বর্তমানে এ হার ১০% করা হয়েছে। তবে নিলামে চা বিক্রয়ের ক্ষেত্রে এ হার ১%।

১৯. ৫৩ই: কোম্পানির সংজ্ঞায় ফার্ম কে অন্তর্ভূক্তকরণ
পূর্বে কোন কোম্পানি তার পরিবেশক, ডিলার বা এজেন্টকে কোন কমিশন, ফি প্রদান করলে উহার উপর কর কর্তনের বিধান ছিল। পরিবর্তিত বিধানে কোম্পানির সংজ্ঞায় ফার্ম কেও অন্তর্ভূক্ত করার কারণে ফার্ম যদি তার পরিবেশক, ডিলার বা এজেন্টকে কোন কমিশন, ফি প্রদান করে, তাহলে ৫৩ই ধারা মোতাবেক নির্ধারিত হারে কর কর্তন হবে।

২০. ৫৩এফ: নাবালকের নামে সঞ্চয়ী হিসাব খোলা বা স্থায়ী আমানত রাখা
এ ধারায় সংযোজিত প্রোভাইসো মোতাবেক, নাবালকের নামে সঞ্চয়ী ব্যাংক হিসাব খোলা বা স্থায়ী আমানত রাখার ক্ষেত্রে পিতা-মাতার টিআইএন নাবালকের টিআইএন হিসেবে বিবেচিত হবে।

২১. ৬৮বি: গাড়ির বিপরীতে অগ্রিম আয়কর পরিশোধের বিধান
গাড়ির রেজিস্ট্রেশনকালে বা ফিটনেস নবায়নকালে ৬৮বি ধারায় অগ্রিম আযকর পরিশোধ করতে হয়। কোন বছরে যদি অগ্রিম আয়কর পরিশোধ হয়ে না থাকে, তাহলে পরবর্তী বছর ফিটনেস নবায়নকালে একত্রে পূর্ববর্তী বছর বা বছরসমূহের অগ্রিম আয়করসহ বর্তমান বছরের অগ্রিম আয়কর একত্রে পরিশোধ করতে হবে।

২২. ৮০ ধারা প্রতিস্থাপন: সম্পদ, দায় ও জীবনযাত্রার বিবরণী দাখিল সংক্রান্ত
৮০ ধারা প্রতিস্থাপন করা হলেও পূর্বের বিধানসমূহ বহাল আছে। অতিরিক্ত যে বিষয়গুলো সংযোজন করা হয়েছে তাহলো –
– বাংলাদেশী অনিবাসীরা শুধুমাত্র বাংলাদেশে রক্ষিত সম্পদ প্রদর্শন করবেন। বিদেশে অবস্থিত সম্পদ প্রদর্শন হতে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে।
– বিদেশিরা শুধুমাত্র বাংলাদেশে রক্ষিত সম্পদ প্রদর্শন করবেন।

২৩. ৮২সি: টার্নওভার করের হার হ্রাস
ব্যক্তি পর্যায়ে টার্নওভার করের হার ০.৫০% হতে হ্রাস করে ০.২৫% করা হয়েছে।

২৪. ১১৭এ: উৎসে কর কর্তন মনিটরিং সংক্রান্ত
পূর্বে এ ধারায় বোর্ড বা বোর্ড কর্তৃক ক্ষমতাপ্রাপ্ত কর্তৃপক্ষ প্রয়োগ করতে পারত। পরিবর্তিত বিধানে এ ক্ষমতা কমিশনার/মহাপরিচালক (কর পরিদর্শন)/মহাপরিচালক (সিআইসি) কে দেয়া হয়েছে। বর্তমান বিধান অনুযায়ী কমিশনার/মহাপরিচালক (কর পরিদর্শন)/মহাপরিচালক (সিআইসি) বা তার কর্তৃক ক্ষমতাপ্রাপ্ত কর্তৃপক্ষ এ ধারায় কার্যক্রম গ্রহণ করতে পারবে।

২৫. ১৫২ও: এডিআর কর্তৃক সিদ্ধান্ত দেয়ার সময়সীমা ২ মাস হতে বাড়িয়ে ৩ মাস করা হয়েছে।

২৬. ১৮৪এ: টিআইএন গ্রহণ সংক্রান্ত
এ ধারায় নতুন ক্লজ সংযোজনের মাধ্যমে ২ লক্ষ টাকার অধিক সঞ্চয়পত্র ক্রয়ের ক্ষেত্রে, ডাকঘর হিসেবে ২ লক্ষ টাকার অধিক জমা রাখার ক্ষেত্রে ও সমবায় সমিতির সনদ নেয়ার ক্ষেত্রে টিআইএন বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।

২৭. তৃতীয় তফসিলে দালানের অবচয় হারের হ্রাস
নপূর্বে সাধারণ দালান ও কারখানা দালানের অবচয়ের হার ছিল যথাক্রমে ১০% ও ২০%। পরিবর্তিত বিধানে উহা হ্রাস করে যথাক্রমে ৫% ও ১০% করা হয়েছে।

২৮. ৬ষ্ঠ তফসিলের পার্ট-এ তে নতুন করমুক্ত খাত অন্তর্ভূক্তকরণ
৬ষ্ঠ তফসিলের পার্ট-এ এর প্যার-৩৩ এ অন্তর্ভূক্তকরণের মাধ্যমে কয়েকটি খাতের আয়কর কর অব্যাহতি দেয়া হয়েছে। সেগুলো হলো – Cloud service; System Integration; e-learning platform; e-book publications; Mobile application development service; and IT Freelancing.

২৯. ৬ষ্ঠ তফসিলের পার্ট-এ এর প্যারা-৩৯ প্রতিস্থাপন
আয়কর অধ্যাদেশ, ১৯৮৪ এর প্যারা-৩৯ এ ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পে ৫০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত টার্নওভার হতে আয়কে কর অব্যাহতি দেয়া হয়েছিল। পরিবর্তিত বিধানে, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পে ৫০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত টার্নওভার হতে আয়ের উপর কর অব্যাহতি বহাল রয়েছে। তবে এসএমই এর মালিক মহিলা হতে টার্নওভারের পরিমাণ ৭০ লক্ষ করা হয়েছে। তবে শর্ত থাকে যে, তাদেরকে আয়কর অধ্যাদেশের অন্যান্য বিধান যথাযথভাবে পরিপালন করতে হবে।

বিলম্ব সুদ সমাচার [Delay Interest] (ধারা-৭৩এ)

বিলম্ব সুদ সমাচার (ধারা৭৩এ)

৩০১১২০২০

১. আয়কর অধ্যাদেশ, ১৯৮৪ এর ২(৬২এ) ধারায় নির্ধারিত সময়ের মধ্যে আয়কর রিটার্ন দাখিল না করলে ৭৪ ধারায় প্রদেয় করের (সারচার্জসহ) উপর ৭৩এ ধারায় বিলম্ব সুদ প্রদেয়।

২. ৭৫(৬) ধারা মোতাবেক সময় নিলেও ৭৪ ধারায় প্রদেয় করের উপর বিলম্ব সুদ প্রদেয়।

৩. তবে যদি কোন করদাতার কর প্রদেয় না হয় তার বিলম্ব সুদ প্রদেয় হবে না।

৪. ৩০ নবেমবরের মধ্যে সকল কর পরিশোধ করলেও বিলম্ব সুদ প্রদেয় হবে না।

৫. বিলম্ব সুদ হিসাবের পদ্ধতি:

ধারা যাক, একজন পুরুষ করদাতার ২০২০-২১ করবর্ষে

মোট আয় ৳ ১০,০০,০০০

প্রদেয় কর ৳ ৮০,০০০

বিনিয়োগজনিত কর রেয়াত ১৫,০০০

নিট প্রদেয় কর ৳ ৬৫,০০০

পরিশোধিত কর:

(ক) অগ্রিম কর (গাড়ি ফিটনেসের সময়) ৳ ১৫,০০০

() বেতন হতে উৎসে কর্তন ৩৬,০০০

৩০ জুন ২০২০ তারিখের মধ্যে পরিশোধিত মোট কর ৫১,০০০

রিটার্নের সাথে প্রদেয় কর (৭৪ ধারা) ৳ ১৪,০০০

৩০ নবেমবরের মধ্যে এ কর পরিশোধ করলে বিলম্ব সুদ প্রদেয় হবে না। রিটার্ন দাখিলের জন্য সময় নিয়েও যদি ৩০ নবেমরের পরে এ কর পরিশোধ করা হয় তাহলে এ করের উপর মাসিক ২% হারে বিলম্ব সুদ প্রদান করতে হবে।

ধরা যাক, করদাতা রিটার্ন দাখিলের জন্য ৭৫(৬) ধারা মোতাবেক ২ মাস সময় নিয়েছেন। তিনি ১ জানুয়ারি ২০২১ তারিখে রিটার্ন দাখিল করলেন এবং রিটার্নে সাথে প্রদেয় ৳ ১৪,০০০ টাকা পরিশোধ করেছেন। তাহলে তাকে নিম্নরূপ বিলম্ব সুদ প্রদান করতে হবে:

বিলম্বিত দিনের সংখ্যা: ১ ডিসেমবর হতে ৩১ ডিসেমবর = ৩১ দিন।

বিলম্ব সুদ: (১৪,০০০×২×৩১ দিন)÷(৩০*১০০) = ৳ ২৮৯

করদাতাকে ৳ ১৪,০০০ করের সাথে ৳ ২৮৯ বিলম্ব সুদ, অর্থাৎ মোট ৳ ১৪,২৮৯ রিটার্ন দাখিলের সময় পরিশোধ করতে হবে।

বিলম্ব সুদ (৭৩এ ধারা) ও জরিমানা (১২৪ ধারা) দুটো আলাদা জিনিস। একটির সাথে অপরটিকে গুলিয়ে ফেলবেন না।

Tax Rate for the Assessment Year 2021-22

২০২১-২২ করবর্ষের জন্য ব্যক্তি ও ফার্ম পর্যায়ভুক্ত করদাতাদের কর হার


ক্রমিক মোট আয় কর হার কর
১.১ সাধারণ করদাতার প্রথম ৩,০০,০০০ ০%
১.২ মহিলা করদাতার প্রথম ৩,৫০,০০০ ০%
১.৩ ৬৫ বছর বা তদূর্ধ্ব পুরুষ করদাতার প্রথম ৩,৫০,০০০ ০%
১.৪ তৃতীয় লিঙ্গের করদাতা প্রথম ৩,৫০,০০০ ০%
১.৫ প্রতিবন্ধী করদাতার প্রথম ৪,৫০,০০০ ০%
১.৬ গেজেটভুক্ত যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা করদাতার প্রথম ৪,৭৫,০০০ ০%
১.৭ প্রতিবন্ধী ব্যক্তির পিতা/মাতা/আইনানুগ অভিভাবক – যেকোন একজনের প্রাপ্য করমুক্ত সীমার অতিরিক্ত ৳ ৫০,০০০ ০%
১.৮ শুধুমাত্র কৃষি হতে আয় থাকলে প্রাপ্য করমুক্ত সীমার অতিরিক্ত ২ লক্ষ টাকা ০%
উপরোক্ত সকল করদাতার করমুক্ত সীমা বাদ দেয়ার পর
মোট আয়ের পরবর্তী ১,০০,০০০ ৫% ৫,০০০
মোট আয়ের পরবর্তী ৩,০০,০০০ ১০% ৩০,০০০
মোট আয়ের পরবর্তী ৪,০০,০০০ ১৫% ৬০,০০০
মোট আয়ের পরবর্তী ৫,০০,০০০ ২০% ১,০০,০০০
মোট আয়ের অবশিষ্ট অংক ২৫%

 


Fatal error: Uncaught wfWAFStorageFileException: Unable to verify temporary file contents for atomic writing. in /home/taxedu/public_html/wp-content/plugins/wordfence/vendor/wordfence/wf-waf/src/lib/storage/file.php:51 Stack trace: #0 /home/taxedu/public_html/wp-content/plugins/wordfence/vendor/wordfence/wf-waf/src/lib/storage/file.php(658): wfWAFStorageFile::atomicFilePutContents() #1 [internal function]: wfWAFStorageFile->saveConfig() #2 {main} thrown in /home/taxedu/public_html/wp-content/plugins/wordfence/vendor/wordfence/wf-waf/src/lib/storage/file.php on line 51